মোমিন।
জি ছার।
আজ কোন কাজ নেই।
কিছু করবোও না। এখন ঘন্টা দুয়েক মুভি দেখবো। তুই ও দেখবি আমার সাথে। হলিউডের মুভি দেখেছিস?
হলিউড কী ছার?
ইংলিশ মুভি। আমেরিকান।
তোর তো একশন দেখতে ভালোলাগে। আয় দেখ। মানুষ কাটা একটা মুভি আছে। ভয়ঙ্কর। এক শয়তান লোক
শুধু নানা রকম ভয়ানক পদ্ধতিতে মানুষ হত্যা করে। এরকম এক সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি মুভি।
কন কী, কেমুন পদ্ধতি ছার?
সায়েন্স ফিকশন কেমন
লাগে তোর? বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী টাইপ।
বিজ্ঞান-ফিজ্ঞান
ভাল্লাগে না ছার। শালারা কয়, পানির নাকি স্বাদ-গন্দ
নাই। আমি কই, তেষ্টা পাইছে তোর? পানির মুতো সোয়াদের জিনিস এ জগতে আর কী আচে? এমন কোন জীব আছে যে পানি খায় না? পুরা দুনিয়াতো স্বাদহীনের পিচে ছুটছে তাইলে।
মানুষ মারারডা কন। ওইডাই শুনি।
আচ্ছা শোন। ধর, খুনি একটা মানুষের মাথার উপর বিশাল এক পাথর ঝুলিয়ে
দিলো। আর ওই পাথর বাঁধা দড়ি হুইলের উপর দিয়ে ঘুরিয়ে ওর হাতে ধরিয়ে দিল। মানুষটা পাথরের
নিচে বাঁধা আছে। ও যতক্ষণ দড়িটা টেনে ধরে রাখতে পারবে ততক্ষণই বেঁচে থাকবে। দড়ি ছেড়ে
দিলে পাথর এসে মাথায় পড়ে থেঁতলে যাবে। বাঁচার জন্যেও একটা উপায় থাকবে। তবে তা হবে খুবই
সাধারণ কিন্তু ভীষণ কঠিন। এরকম আরো কিছু পদ্ধতি ওই লোক ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করে।
যেমন ধর, একটা মানুষকে বেঁধে দিয়ে ওর পেছনে কুড়িটার মত
বুলেট ভর্তি বন্দুক তাক করে দিল। আর ওই মানুষটার সামনে একটা বোর্ড আছে যাতে সুইচ আছে
মোট বন্দুক থেকে একটা বেশি। যার যে কোন একটি টিপলে সবগুলা বন্দুক থেকে বুলেট শুট হবে।
সাথে সাথে লোকটি ঝাঁঝরা হয়ে যাবে। আর একটা অতিরিক্ত সুইচ আছে যেটি টিপলে বন্দুকগুলো
কাজ করবে না। লোকটি বেঁচে যাবে। অর্থাৎ সে বাঁচা-মরার জন্য মাত্র একবার সুইচ টেপার
সুযোগ পাবে।
আরেকটা হচ্ছে, ভিকটিমকে ধারালো অস্ত্রের উপরে আনুভূমিক ভাবে
শুইয়ে রাখবে। এক্ষেত্রে ভিকটিম অস্ত্র থেকে দশ ফুট উপরে থাকবে। নিচে ছুরি থাকবে ক্রস
চিহ্নের আকারে। বাঁধন খুলে দেয়া মাত্র ভিকটিম ছুরির উপরে পড়ে হাত-পা সহ আট ফালি হয়ে
কেটে যাবে। তবে এরও একটা বাঁচার উপায় থাকবে।
মুভি শেষে দেখাবে
এই লোকটার এমন কুকর্মের পেছনে এক মহৎ উদ্দেশ্য আছে। আয়, মুভি দেখার সময় এরকম আরো সব ভয়ংকর সিস্টেম দেখবি।
ভালো লাগবে।
মানুষ মারা দেকতে
ভাল লাগবি- ছার?
কেন, সালমান খান ভিলেনদের পেটালে ভালো লাগে না? ভিলেনরা কি মানুষ না? শুধু হিরোরা একাই মানুষ নাকি? আয় বস। ওই চেয়ারটা টেনে বস।
আমি আর ছার খুব মুনোযোগ
সহকারে মানুষ মারার ভয়ংকর সব ছিনারি দেখচি। ছার পদ্ধতিগুলি বহুত উপভোগ করচেন। বিশেষ
ছিন আসলে আহ, উহ এরকম শব্দ করচেন।
খুনির বিভিন্ন ভয়ানক পদ্ধতি ব্যবহারের বিচক্ষণতা দেইখে ছার নানান ভঙ্গিমায় মুগ্ধতা
প্রকাশ করচেন। আমাক বইয়ের বিভিন্ন ঘটনা আগে থাকতেই কয়ে দিচ্চেন। এতে আমার বুজতে সুবিদা
হচ্চে। বইটা মাজপথে। পুলিশ সেই খুনিক ধরার চেষ্টা চালাচ্চে।
মোমিন।
জি ছার।
সকালে কী প্রশাসনিক
ভবনের সামনে দিয়ে এসেছিস?
জি ছার। সব ডিপার্টমেন্টের
কেঁচিগেটে তালা ঝুলানা। তয় প্রশাসনিক ভবন খুলা দেকনু। আইজ আর পোলামাইয়ারা আসপিনা। কয়দিন
আন্দোলন ক্যরি হাঁপায় গিচে। পুলামাইয়ারা যে বাপ-মায়ের খাইয়ে ইসব ক্যরি বেড়ায় কেন, কে জানে? বদরা পড়ালেখা করতে অ্যাসি মারামারি করে। ঝোপঝাড়ে ব্যসি পেরেম
করে। ছি...
কয়টা বাজে, ঘড়ি দেখতো।
সাড়ে নয়টা ছার।
একটু প্রশাসনিক ভবন
থেকে ঘুরে আয়। আমি নাস্তা সেরে নেই।
ঘরে কিচু আচে ছার? নাস্তা অ্যানি দিবো?
ফ্রিজে কিছু থাকার
কথা। তুই যা, তাড়াতাড়ি যা।
চলবে...
No comments:
Post a Comment